কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ – ১০

কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ ১০

কয়েক দিন ধ’রে একটা উৎকট বিচ্ছিরি ঝামেলায় রয়েছে হাসান; একটা নোংরা। অশিক্ষিত কোটিপতিকে ধরেছে অচিকিৎসা কবিতা ব্যারামে, কোটিপতিটা হাসানের সাথে অ্যাডের থেকে কবিতা আলোচনা করতেই বেশি পছন্দ করছে, সারাক্ষণ কবিতা, যেনো ওই কোটি কোটি টাকা, পাজেরো, কারখানা, আমদানিরাপ্তানি, গাড়ির, চামড়ার ও আরো চৌত্ৰিশটা ব্যবসা কিছু নয়, কবিতাই সব, তাকে এখন অবিনশ্বর অমরতার রোগে ধরেছে। টাকা হয়েছে, এখন অমরতাও ওর চাই; পারলে কিনে ফেলতো, অমরতা যদি নিউইয়র্ক হনুলুলু সিডনি লন্ডনের একটা ফ্ল্যাট হতো, তাহলে এতো দিনে ও কিনে ফেলতো। ওর ফার্মের একটা অ্যাড পাওয়ার পরই হাসানের পরিচয় ওই মোটা গ্যালগ্যালে থুতুছিটানো ঋণখেলাপিটার সাথে; হাসানকে পাওয়ার পর সে অ্যাডের কথা ভুলতেই বসেছে; জসীমউদদীন সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতো পদ্যে, ‘আমার মাথা নত ক’রে দাও’, ‘মিলন হবে কত দিনে’ ধরনের মরমী গানে দামি খাতা ভ’রে তুলছে, হাসানকে নিমন্ত্ৰণ ক’রে চলছে তার বনানীর বাড়ি গিয়ে পান করতে করতে ওগুলো একটু দেখে দিতে। এই চােদানি পাছামারা কোটিপতিগুলোকে কেনো যে শেষ বয়সে চাকরানিরোগের মতো কবিতারোগে ধরে, হাসান বুঝতে পারে না; এই চার ডেঞ্চারঅলাটা একলাই নয়, আরো কয়েকটিকে দেখেছে হাসান, তারা কবিতা লিখে অমর রবীন্দ্রনাথ হ’তে চায়। কোটি কোটি বনানী পাজেরো ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদির পর কেনো এই পেটমোটা গাড়লগুলোর এই অমরত্যারোগ? ওরা পাক্কা ঝানু লোক, অন্ধিসন্ধি সব জানে; কিন্তু হাসান ওদের পদ্য দু-একটি পড়ে দেখেছে, ভেতরে ভেতরে ওরা শিশু, ক্লাশ ফোরের শিশু, তুচ্ছ সরল মহান আবেগে ওরা ফুলেফেপে আছে। এক দিকে যারা ঈশ্বরের থেকেও এতো প্রাপ্তবয়স্ক অন্য দিকে তারা কীভাবে হয়। এতো অপ্রাপ্তবয়স্ক? এই ঝানু পাক্কা কোটিপতিটাও একটা শিশু, বস্তি, ব্রিজ, রেলগাড়ি, ধর্ষিতা হালিমা রহিমা সালেহাকে নিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ জসীমউদদীনের মতো অনেক পদ্য লিখে ফেলেছে, জীবনে যে সে কিছুই করতে পারে নি, তার সোনার মানবজীবন যে ব্যর্থ গেছে, চাষটাষ কিছুই করতে পারে নি, তার জন্যে সে পাতায় পাতায় হাহাকার করেছে, ‘প্রভু’, ‘প্রেম’, ‘হৃদয়’ লিখতেও বানান ভুল করেছে, কিন্তু কবি তাকে হ’তে হবে, অমরতা তার চাই।

হাসানকে যেতেই হবে তার বনানীর বাড়িতে, একটু পানাহার করতে করতে দেখে দিতে হবে তার ওই অবিনাশী রচনাবলি; সে কিছু চায় না, একটু অমরতা চায়। হাসান একা যেতে রাজি হয় নি, বলেছে সে তার এক কবিবন্ধুকে নিয়ে যাবে, যে আরো বড়ো কবি, যে তার কবিতা দেখে দিলে সে কবি হবেই, এমনকি রবীন্দ্রনাথও হয়ে যেতে পারে। রাকিব সুলতানকেই মনে পড়েছে হাসানের, রাকিব পান করতে পছন্দ করে, এবং এসব কোটিপতির সামনে সহজেই জিপ, টেনে খুলে অনায়াসে একটা পরম দীর্ঘ উত্তেজিত সত্য দেখিয়ে দিতে পারে।

গাড়লটা একটা বাড়ি করেছে বটে, আরেকটুকু হ’লেই বাড়িটার নাম তাজমহল রাখতে পারতো। না কি রেখেছে? হাসানদের গাড়ি যখন ভেতরে ঢুকছে পাঁচসাতটা দারোয়ান এসে টানাটানি ক’রে তোরণ খুলে দেয়, একটা ছোটােখাটাে জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে গাড়ি গিয়ে তাজমহলের দরোজায় থাকে; গাড়লটা লোক বেশ, মনেপ্ৰাণে কবি তো, গ্রহের চক্রান্তেই শুধু টাকা পয়সা করেছে, তার সম্পূর্ণ মোটা শরীরটা নিয়ে ছুটে আসে তাদের অভ্যর্থনা করার জন্যে, যদিও একটা চাকর পাঠিয়ে তাদের ওপরে নিয়ে গেলেই হাসান যথেষ্ট ধন্য বোধ করতো। কিন্তু না, তারা তো কোনো কোটিপতির বাড়ি আসে নি, তারা দুজন বড়ো কবি এসেছে এক ছোটাে অপ্রতিষ্ঠিত কবির বাড়িতে, তাদের এভাবেই অভ্যর্থনা করতে হবে, নইলে এ-বাড়িতে তারা পা ফেলবে কেনো?

রাকিব সুলতান কোটিপতিটার পেট হাত বুলোতে বুলোতে বলে, ভাই, আমরা দুইজন বড় কবি আসলাম একজন ছোট কবির বাড়িতে, রবীন্দ্রনাথরা আসলো কুমুদরঞ্জনের বাড়িতে, এই মহান ঘটনার কথা বাঙলা কবিতার ইতিহাসে বোন্ড টাইপে ল্যাখা থাকবো।

কোটিপতিটা বলে, হ, কবিভাই, ল্যাখা থাকবো; জীবন আমার ধইন্য হইল।

জন্যে আপনে সেইরকম আয়োজন ত করেন নাই। বড় কবিগো সম্মান না দিলে ছোট কবিরা কবি হইবো কিভাবে?

কোটিপতিটি মেঝে গ’লে পড়ার ভঙ্গিতে বলে, আমার ভুল হইয়া গ্যাছে, বলেন কবিভাই, কি আয়োজন করতে হইবো?

হাসান অত্যন্ত কষ্টে হাসি চেপে রেখে বলে, না, না, আপনি বিচলিত হবেন না, কোনো ভুল হয় নি, আর কোনো আয়োজন করতে হবে না।

রাকিব বলে, আমরা দুইজন বড় কবি একটা ছোট কবির বাড়িতে আসলাম, এই ঘটনা ত শতাব্দীতে একবারই ঘটবো, দুইবার ঘটবো না, আপনের উচিত আছিল আমরা যেই পথ দিয়া উপরে যামু যেই পথে আমাগো পায়ের ধুলা পরবো সেই পথে বিশ পঁচিশ কেজি গোলাপের পাপড়ি ছারাই ছারাই রাখন।

উত্তেজিত হয়ে ওঠে কোটিপতি কবি, চিৎকার ক’রে ডাকতে থাকে ডজনখানেক চাকরবাকরকে, খুবই বিব্রত হয়ে বলতে থাকে, কিছু মনে কইরেন না কবিভাইরা, কিছু মনে কইরেন না, আমার ভুল হইয়া গ্যাছে, এখনই আমি এক মোন গোলাপের পাপড়ি আইন্যা আপনাগো পথে ছারাই দিতেছি।

ওপরে গিয়ে দেখে বসার একশোবর্গমাইল ঘরটিতে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ সমস্ত শিল্পকলা সমস্ত সৌন্দর্য গাদাগাদা জড়ো করা আছে, মাটির নিচের মাটির ওপরের সমুদ্রের ভেতরের উত্তর মেরুর দক্ষিণ মেরুর বিষুব রেখার কর্কট ক্রান্তির পর্বত চূড়োর আকাশের ওপরের আফ্রিকার জঙ্গলের আমেরিকার শহরের ইউরোপের বন্দরের সব কিছুর আবর্জনাস্তূপ সৃষ্টি করা হয়েছে।

রাকিব বলে, এইখানে ত বসনের কোনো জায়গা নাই। কোটিপতি কবিটি বুঝতে না পেরে বলে, এই যে সোফাগুলি দেখতেছেন, এইগুলিতেই বসেন কবিভাই, পাঁচলাখ দিয়া বানাইছি।

রাকিব বলে, এইগুলি বসনের লিগা বুঝি, কবিভাই? আমি ত ভাবতেছিলাম হাগনের লিগা।

লোকটি চমকে উঠে বলে, কি কইলেন কবিভাই, কি কইলেন? রাকিব বলে, না, কবিভাই, কিছু কই নাই; কিন্তু কথা হইছে আমি আবার মহাকবি মধুসূদনের মতো পিঁড়ি না হইলে বসতে পারি না, মহাকবিরা পিঁড়িতে বসতে পছন্দ করে।

লোকটি বলে, ফিরি? ফিরি? ফিরি কই পামু? গ্যারামে ফিরিতে বইতাম, আমাগো অনেক ফিরি আছিল, এইখানে ত ফিরি নাই। দুইটা ফিরি কিন্যা আনুম?

হাসান কার্পেটের ওপর বসতে বসতে বলে, এখানেই বসি, বিলের ঘাসের মতো মনে হচ্ছে।

লোকটি বলে, কার্পেটের ওপরই বসবেন, কবি ভাই? বসেন।

হাসান আর রাকিব কার্পেটের ওপর বসে পড়ে।

রাকিব বলে, লগে একটা লুঙ্গি আর গামছা লইয়া আসলেই ভাল হইত। কোটিপতি কবিটি দৌড়ে গিয়ে গোটাচারেক মোটােগাটা দামি ডায়েরি এনে রাখে। তাদের সামনে, এবং ডাকতে থাকে, ও মনোরা, ও হালিমা, ও রোকেয়া, এইদিকে আসো।

তার ডাকের সাথে সাথে বেশ তরতাজা বেশ টাটকা বেশ সুগন্ধি বেশ মাংস মনোরা, হালিমা, রোকেয়া এসে হাজির হয়।

কোটিপতি কবি বলে, আমার বড় কবি ভাইরা আসছে, দ্যাশের দুইজন অইত্যান্ত বড় কবি, বোতল আর পারোটা গোস্ত, প্লেট, গোলাশ লইয়া আসো, বাইর‍্যা দেও।

মেয়ে তিনটি গোটাচারেক ব্ল্যাক লেবেলের বোতল, পারোটা, গোস্ত, কাবাব, প্লেট, চামচ, ধবধবে শাদা পানিপাত্র নিয়ে আসে। তারা ছুরি নিয়ে কাটা কুমড়োর ফালির মতো হেসে হেসে প্লেটে প্লেটে মাংস পরোটা কাবাব বেড়ে দিতে থাকে, রাকিব গেলাশে গেলাশে ব্ল্যাক লেবেল ঢালতে থাকে।

ঢেলেই রাকিব এক গেলাশ ঢক ঢক ক’রে গিলে ফেলে, এবং বলে, ও মিস মনোরা মিস হালিমা মিস রোকেয়ারা, বোঝলা আমরা বড় কবি।

মেয়ে তিনটি নিজেদের মধ্যে চোখাচোখি ক’রে ইলশের ঝোলে হলদে কুমড়োর ফালির মতো হাসতে থাকে।

হায়রে নারী, তোমরা সতী, তোমরা হইলে মায়ের জাতি, তাই ত আমরা পুরুষগণ তোমার পায়ে মাথা পাতি। তোমরা ছারা ক্যামন হইত, এই দুনিয়া খালি রইত।

রাকিব পান করতে করতে জিজ্ঞেস করে, কবিভাই, আপনের ইস্ত্রী আর পোলাপােনরা কই?

কবি বলে, আহ, আমার ইস্ত্রী ত আমরিকায় থাকে, আর এক পোলা থাকে লন্ডনে, একপোলা নিউইয়র্কে, আরেকপোলা সিডনিতে, এক মাইয়া থাকে ওয়াশিংটনে, আরেক মাইয়া থাকে টরন্টোতে…

রাকিব বলে, আর আপনে কবিভাই কষ্ট কইরা মিস মনোরা মিস হালিমা মিস রোকেয়ারে লইয়া এই গরিবকুটিরে একলাই থাকেন?

কবি বলে, কি আর করুম কবিভাই, অগো লইয়াই আছি।

হাসান বলে, ধনীদের নিঃসঙ্গ দুঃখ খুবই ব্যাপক, ধনীরা খুবই দুঃখী।

রাকিব কয়েক গেলাশ গিলে ফেলেছে, খুবই চমৎকার আছে, জিজ্ঞেস করে, কবিভাই, মাইয়াগুলিরে আপনে একলাই ইউটিলাইজ করেন, না অন্য কবিগোও ব্যবহার করতে দেন?

কবিও এর মাঝে তার পাঁচ সাতটি কবিতা পড়তে পড়তে দু-তিন গোলাশ গিলে ফেলেছে, তার কণ্ঠে কবিতা জড়িয়ে আসছে।

কবি বলে, বয়স হইলেও তিন চাইরটা মাইয়া আমার একলাই লাগে, আমার প্রোস্টেট গ্র‍্যান্ড ঠিক আছে।

রাকিব বলে, দুইটা আইজ বড় কবিগো ইউটিলাইজ করতে দেন, পত্রিকায় আপনের কবিতা ছাপাই দেঅনের ব্যবস্থা করুম।

মেয়ে তিনটি ঘোরাঘুরি করছে, হাসছে, গেলাশে ব্ল্যাক লেবেলও ঢেলে দিচ্ছে, মনে হচ্ছে বড়ো কবিদের ওরা অপছন্দ করছে না।

কবি একটু রেগে ওঠে, কবিভাইরা, আমার কবিতা শোনেন, কবিতা শোনানের লিগা আপনাগো দাওয়াত দিয়া আনছি, ব্ল্যাক লেবেল খাওয়াইতেছি।

রাকিব বলে, আপনের ওই বালের কবিতা শুনতে শুনতে আমার প্যাট ভাইর‍্যা মুতে ধরছে।

কোটিপতি কবি রাকিবকে টয়লেট দেখানোর জন্যে একটি মেয়েকে ডাকাডাকি করতে তাকে ।

রাকিব বলে, বড় কবিরা ছোট কবির বাসায় আইস্যা টয়লেটে মোতে না, তাগো কার্পেটে মোতে সোফায় মোতে লাখট্যাকার ফুলদানিতে মোতে রঙিন মাছের বাক্সে মোতে তাগো মোখে মোতে।

রাকিব দাঁড়িয়ে জিপ খুলতে থাকে, এবং এক সময় শাশা ক’রে এদিকে সেদিকে প্রস্রাব করতে থাকে, তার ধারা থামে না।

কোটিপতি কবিটি চিৎকার ক’রে ওঠে, এ আপনে কি করতেছেন, এ আপনে কি করতেছেন? এইটা বাথরুম না, এইটা বাথরুম না, এইটা আমার দশ লাখ ট্যাকার কাশ্মিরি কাপেট।

রাকিব বলে, হাসান, এই ভাগাড়ে তুমিও একটু মোতো, মোতার জইন্যে এর থিকা ভাল জায়গা আর পাইবা না, বড় কবিরা কোটিপতির বাড়িতে এইভাবেই মোতে, মোতো হাসান মোতো।

রাকিব সুলতান যেনো পাঁতাগ্রুয়েল হয়ে উঠেছে।

হাসানেরও তীব্র প্রস্রাবে ধরেছে, তার তলপেট ফেটে যাচ্ছে, শিশ্ন শক্ত হয়ে প্রচণ্ড ব্যথায় ভেঙে পড়ছে, তার মাথার চারদিকেও সবুজ কুয়াশা জমে আসছে গোলাপি গন্ধ জ’মে আসছে রুপোলি জল টলমল করছে; সে টয়লেটে যাওয়ার জন্যে উঠে দাঁড়ায়, বসার একশোবর্গমাইল দশকোটি টাকার ঘরটিকে তার রেলস্টেশনের রাস্তার পাশের একটা নোংরা প্রস্রাবখানা মনে হয়, যার দেয়ালে লেখা আছে ‘এখানে প্রস্রাব করিবেন না’, কিন্তু যাকে দেখলেই রিকশাঅলা পকেটমার ভিখিরি পিয়ন হকারদের তীব্র প্রস্রাবে ধরে। পচা ইঁদুর পড়ে আছে। এখানে ওখানে, ছড়িয়ে আছে পাতলা পায়খানা, পাগলের বমি, ভজভজ ক’রে ময়লা ছুটছে, ছড়িয়ে আছে মাসিকভেজা ত্যানা, কুকুরের গু; এতো ঘিনঘিনে জায়গায় সে প্রস্রাব করে কী করে? তার একটি পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে টয়লেট দরকার।

হাসান বলে, আমার একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন টয়লেট দরকার, বড্ডো প্রস্রাবে ধরেছে, আমার একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন টয়লেট দরকার।

কোটিপতি কবি বলে, ওই দিকে যান, একটা বড়ো টয়লেট আছে।

হাসান তলপেট চেপে একলা হাঁটতে হাঁটতে একটি পাঁচকোটি টাকার ঘরে ঢোকে, মনে হয় এখানে প্রস্রাব করতে পারবে, কিন্তু ঘরটি দেখে তার শরীর ঘিনঘিন করতে থাকে, সে বলে, ‘এতো নোংরায় আমি প্রস্রাব করতে পারি না’; সে আরেকটি পাঁচকোটি টাকার ঘরে ঢোকে, সেটা দেখেও বলে, ‘এতো নোংরায় আমি প্রস্রাব করতে পারি না’; সে আরেকটি পাঁচকোটি টাকার ঘরে ঢোকে, এবং বলে, ‘এতো নোংরায় আমি প্রস্রাব করতে পারি না’। সে ঘর থেকে ঘরে ঘুরতে থাকে, কোটি কোটি টাকায় সাজানো প্রত্যেকটি ঘরকে তার নোংরা আবর্জনাস্তূপ ব’লে মনে হয়, এবং সে বলতে থাকে, ‘এতো নোংরায় আমি প্রস্রাব করতে পারি না’। ঘুরতে ঘুরতে সে আবার একশোবর্গমাইল বসার ঘরটিতে এসে উপস্থিত হয়, দেখে প্রস্রাবের ওপর গড়াচ্ছে রাকিব সুলতান।

হাসান বলে, রাকিব ওঠে, বাইরে চলো, প্রস্রাবের জন্যে একটি পরিচ্ছন্ন জায়গা দরকার।

রাকিব বলে, চলো, এই ভাগাড়ে দম বন্ধ হইয়া আসতেছে। হাসান রাকিবকে টেনে তুলে ওই আবর্জনাস্তূপ থেকে টলতে টলতে বেরিয়ে আসে; এবং বলতে থাকে, একটি পরিচ্ছন্ন টয়লেট দরকার, একটা পরিচ্ছন্ন টয়লেট দরকার, খুব প্রস্রাবে ধরেছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *